
মাগুরার সেই শিশুটির অবস্থা সংকটাপন্ন সিএমএইচে স্থানান্তর


মাগুরা প্রতিনিধি
মাগুরা শহরের নিজনান্দুয়ালী এলাকায় বোনের বাড়িতে বেড়াতে এসে ধর্ষণ ও হত্যা চেষ্টার শিকার শিশুটির অবস্থা খুবই সংকটাপন্ন। শিশুটিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) স্থানান্তর করা হয়েছে। গতকাল শনিবার বিকালে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল থেকে শিশুটিকে নিয়ে রওনা হয় কার্ডিয়াক অ্যাম্বুলেন্স। ঢামেক হাসপাতালের উপ-পরিচালক আশরাফুল আলম বলেন, মেডিক্যাল বোর্ডের সুপারিশক্রমে ও সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা শারমিন এস মুরশিদের নির্দেশনা অনুয়ায়ী দ্রুততম সময়ে শিশুটিকে ঢাকা সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে স্থানান্তরের ব্যবস্থা নেওয়া হয়। এর আগে গতকাল শনিবার দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (ঢামেক) পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান জানিয়েছিলেন, শিশুটির যৌনাঙ্গে আঘাত রয়েছে। তবে গলায় আঘাত বেশি। তার চিকিৎসায় চার সদস্যের মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। তিনি জানান, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান শিশুটির সব দায়িত্ব নিয়েছেন বলে জানিয়েছে তার পরিবার। গতকাল শনিবার দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালকের দপ্তরে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, মেয়েটির অবস্থা ভেরি ক্রিটিক্যাল (খুব আশঙ্কজনক)। তার গলার আঘাত খুবই মারাত্মক। তার যৌনাঙ্গেও আঘাত রয়েছে। গত রাত ৯টার দিকে মেয়েটিকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়েছে। চিকিৎসকরা আশা প্রায় ছেড়ে দিয়েছেন। বাকিটা আল্লাহ ভরসা। চিকিৎসার জন্য পেডিয়াট্রিক, পিডিয়াট্রিক সার্জারি, অ্যানেসথেসিয়া ও গাইনি ডিপার্টমেন্ট মিলে মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সব ধরনের সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন মাগুরায় ধর্ষণের শিকার শিশুর মা। তিনি বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে ফোনে কথা হয়েছে। তিনি আমাদের সকল দায়দায়িত্ব নিয়েছেন। আমাদের পাশে থেকে সবধরনের সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়েছেন এবং সহযোগিতা করতেছেন। দেশবাসীর কাছে আমি দোয়া চাচ্ছি। শিশুটির মা বলেন, আমার মেয়েটা এখন লাইফ সাপোর্টে আছে। তার অবস্থা ভালো নাই। এতটুকু বাচ্চাকে কীভাবে যে অত্যাচার করেছে হয়তো আপনারা শুনেছেন। কিন্তু দেখতে তো পারেননি। তার শরীরেও কতগুলো আঘাত করেছে। মেয়েকে নির্যাতনের বিষয়ে তিনি বলেন, বড় মেয়ের শ্বশুর, ভাসুর ও মেয়ের জামাই তারা তিনজন মিলেই আমার মেয়ের ওপর নির্যাতন করেছে। মেয়ের জামাই আগেও বিয়ে করেছিল, আমরা বিষয়টি জানতাম না। মেয়ের শ্বশুরের বিরুদ্ধে আগেও আরও দুটি মেয়েলি কেস জড়িত ছিল। সেখান থেকে খালাস নাকি পেয়েছে। এই কেস থেকে যেন কোনো খালাস না পায়। এর সর্বোচ্চ শাস্তি যেন হয়। এদিকে, এ ঘটনায় গতকাল শনিবার সদর থানায় চারজনের নামে মামলা হয়েছে। মামলাটি দায়ের করেছেন শিশুটির মা। মামলায় আসামি করা হয়েছে শিশুটির বোনের স্বামী সজিব শেখ (১৯), সজিব শেখের ছোট ভাই রাতুল শেখ (১৭) ও সজিবের মা জাহেদা বেগম (৪০), বাবা হিটু শেখকে (৪৭)। এরা চারজনই পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছেন। মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে মাগুরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিরাজুল ইসলাম বলেন, ঘটনার তদন্ত ও সব ধরনের আইনি প্রক্রিয়া চলমান আছে। মৌখিক অভিযোগের ভিত্তিতে মামলার আসামিদের আগেই গ্রেফতার করা হয়েছে। পরে শিশুটির মায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে তাদের এজাহারভুক্ত করা হয়েছে।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata
কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ